গ্রীষ্মের প্রথম দিকেই এই বছর শুরু হয়েছে দাবদাহ। জ্যৈষ্ঠের সাথেই শুরু হতে পারে এর চেয়ে বেশি দাবদাহ। ইতোমধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশেই পারদ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস থেকেও বলা হয়েছে আগামী কিছু দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। পূর্বাভাস বলছে চলমান দাবদাহ আরো চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমন গরমের দাবদাহে দীর্ঘ সময় রোদে কাজ করলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি আরো বেশি।
গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে যা করবেনঃ
তীব্র গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ১০ উপায় -
১. পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক যেমন সাদা রঙের পরিধান করতে পারেন।
২. বাড়ির বাইরে বের হলে সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন
৩. শরীরে পানিশূন্যতা এড়াতে অতিরিক্ত বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি ও শরবত পান করতে পারেন।
৪. স্যালাইন পানিতে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও চিনি শরীর সজীব রাখতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে । দীর্ঘ সময় গরমে থাকলে স্যালাইন পানি পান করুন।
৫. গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন আম , ভাঙ্গি, তরমুজ দিয়ে তৈরি তাজা জুস পান করুন
৬.মাংস জাতীয় খাবার কমিয়ে, বেশি করে ফল ও সবজী খানবেন
৭. প্রস্রাবের রঙ লক্ষ্য রাখুন, কারণ প্রস্রাবের গাঢ় রঙ পানি স্বল্পতার লক্ষণ।
৮. সব সময় ঘর থেকে বের হলে ছাতা বা টুপি সাথে রাখুন
৯. ত্বককে সরাসরি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করুন
১০. এতি প্রয়োজন ছাড়া দুপুরে ঘর য়হেকে বের না হওয়াই ভালো।
হিটস্ট্রোক কী?
বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেন, আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত তাপের কারণে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যখন কাজ করা বন্ধ করে দেয় তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলে। ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে যায় এবং শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ কী কী?
১. শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া
২. গরমে অচেতন হয়ে যাওয়
৩. মাথা ঘোরা
৪. তীব্র মাথা ব্যথা
৫. ঘাম কমে যাওয়া
৬. ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া
৭. শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা
৮. বমি হওয়া
৯. হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
১০. শ্বাস কষ্ট
১১. মানসিক বিভ্রম
১২. খিঁচুনি
হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অজ্ঞান হয়ে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যে কাজগুলি করতে হবে তা হল:
১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা স্থান বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।
২. রোগীর শরীর বায়ুচলাচল করতে হবে। ঠান্ডা জলে কাপড় ভিজিয়ে গা মুছে ফেলুন।
৩. শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল, ঘাড়, পিঠ এবং কুঁচকিতে বরফের প্যাক ব্যবহার করা যাবে ।
৪. দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতালে নিয়ে যান।